দৃশ্যান্তর
রাতের স্বচ্ছ আকাশ দেখতে পাই না, তবু কল্পনায় যেন দেখি এক অনন্ত নক্ষত্রভরা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে আছি। ওই যে কালপুরুষ! নিচে মাটিতে মানুষের মিছিল -- ঘাম, রক্ত, অজস্র কোলাহল।
দৃশ্য বদলে যায় দৃশ্যান্তরে। ওই আকাশ, ওই মানুষের মিছিল মিলিয়ে যায়। আমি নিচু হয়ে খুঁজতে থাকি চেনামুখ, চেনা অক্ষর। ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনের আলোকিত নীল পর্দায় দেখি শিশির পড়ছে। শব্দের ভাস্কর্যময় শরীর নীল দ্যুতি ছড়িয়ে ভেসে উঠছে। কিন্তু মন ভরছে না। বইয়ের র্যাকে সাজানো সারি সারি বই আমাকে ডাকছে যেন। ল্যাপটপ ছেড়ে পৌঁছে যাই আমার ছোট্ট ঘরের ছায়ান্ধকার বইয়ের র্যাকের কাছে। শব্দরা ফিসফিস করে ওঠে।
কী বলছে এরা? কারা লিখেছে এত এত বই! জীবনের দর্পণে দেখা নানা চরিত্র ভিড় করেছে এইসব বইয়ের পাতায়। আমার মনে হয় এই প্রজন্ম কি এই বইয়ের পাতায় ঝুঁকে হাতড়ে বেড়াবে শব্দের শরীর? কথাশিল্প কি পাঠকের শ্বাসরুদ্ধ করবে আগামী দিনে? ডিজিটাল বিপ্লব এখন সময়, ঘটনাক্রম আর বিবেককে টুকরো টুকরো করে মুছে ফেলতে চাইছে বইয়ে ঠাসা শব্দের এই অবয়ব। যতিহীন, দীর্ঘ এইসব বাক্য ছোট হতে হতে সাহিত্য একদিন সত্যিই বদলে যাবে মলিকুলার সাহিত্যে।
No comments:
Post a Comment