পীযূষকান্তি বিশ্বাস
দেহলিজ ফিরেছে পঞ্চম সংখ্যা হয়ে । দিল্লির নিজস্ব রঙে । ফিরে এসেছে ভাইরাস আর প্রতিহিংসার প্রচ্ছদে । তার উপরে এমন এক প্রশ্নের আস্তরণ নিয়ে যা বারবার সাবানেও ধুয়ে যায় না । গায়ে তার পোড়া ইটের রং । শতাব্দী পুরানো রং যা অবশ্যম্ভাবী, কোনদিন গায়ে মাখতে চাই নাই, তবুও এই হোলিকা আসে, ইতিহাসের পালাবদল হয়ে । এই ফাগুন এই আকাশে লাগে , আরাবল্লির পাথরে বারবার রক্তলেখায় তা খোদিত হয়েছে । এতোটা কিংবদন্তী তো হলুদ হয়ে আসে, রাজপথে গড়াচ্ছে পত্রালিকা । পবিত্র গঙ্গায় জল গড়িয়েছে , জল তবুও গড়ায় ।
খালিহাতে বসে নেই কেউ, ঝড় উঠেছে প্রতিবাদ, আর যেখানে প্রতিটা ঝড় উড়ে যাবার মতো ঝটিকাবাহিনী নিয়ে বারবার গড়ে উঠেছে দিল্লি, সেই সুলতানি গজনী, কুতুবউদ্দিন আইবক, আলাউদ্দিন খিলজির শাহজানাবাদ । রক্তের রঙে কুতুবমিনার লাল, হুমায়ুন টম্ব পূবের আকাশে হেলে দাঁড়িয়েছে । মানুষের মিছিল এখনো জীবন্ত । তারা স্থবির ছবির মতো , কিন্তু সত্য । এই রাজধানী নিয়ে তোলপাড় সারাদেশে, বিশ্বাস, তর্ক, আশা, প্রত্যাশা, ভয়, আতংক । কার কখন যে নাম্বার আসে ।
দেহলিজ থেকে নেই । কোন ভাইরাস বা রক্তচক্ষু তাঁকে থামাতে পারেনি । শাসক হোক বা এই চৈত্রের প্রশাখায় ঝুলে থাকে আম্রপল্লব, আখের পতন অবশ্যম্ভাবী । আমরা তার উজ্জ্বল উড়ান নিয়ে দুপংক্তি কবিতা লিখে যাই ।
এমন একটা সময়ে দেহলিজ প্রকাশ হচ্ছে, জানি ঘরবন্ধ অন্ধকার ,মেঝেতে জমেছে আবহাওয়ার আবরণ । বাইরে যাওয়া বারণ । একমাত্র জানলা হিসাবে ইন্টারনেট টিপটিপ জ্বলছে । ইন্টারনেটের আবিষ্কার আমাদেরকে ইশারা করছে, মানুষই পারে ঘর বাঁধতে, জানালা বানাতে । যতই বিপর্যয় আসুক, মানুষ এর কার্ফু থেকে বের হবার একটি পথ বের করে আনবে । এত হতাশা, এত নেই নেই এর দেশে, এত কোটি মানুষ । এর সমাধানই মানুষই দেবেন ।
এই নিয়ে দেহলিজের এই মাত্র সামান্য যাত্রা, শুধু ওয়েব পত্রিকাই আমরা করি । মাঝে অফ-অন, অফ-অন । এই সংখ্যায় বিবিধতা, তার কোলাজ, ডায়াস্পোরা, বাংলা, বাংলাদেশ জুড়ে আছে এই যাত্রা অভিমুখ । যথারীতি স্থানীয় ভাষা ও সংস্কৃতি ব্যবধান নিয়ে আগেও দেহলিজ কাজ করেছে, সামান্য প্রচেষ্টা জারি আছে সামনে আনার কিভাবে রাজধানীর হিন্দি সাহিত্য চরিত্র কাজ করে আর ইংরাজি সাহিত্যের কোন পর্যায়ে আছেন দিল্লির সাহিত্য পরিবেশ ।
দিল্লির নিজস্ব চিন্তা, আপনাপন, ভাষা, ছন্দ, দূর-অবস্থান নিয়ে কোন স্থির ম্যানিফেস্টো স্থির করে উঠতে পারিনি । স্থিরও নেই । স্থিরতা একটি ভঙ্গুর ধারনা । যাত্রাই একমাত্র ধ্রুব । তুমি তাঁকে মহান করো । নিজে পবিত্র হয়ে যাও । ইতিহাস বলে যাদের হাত কামড়ালো, তারা হরিষেনের বাউলিতে এখনো ঘুরে বেড়ায় । সবুজ টিয়া আর বসন্তের এই হাওয়া তাদেরকে এক শূন্যতর সাহিত্যের পাঠ দেয় । তুমি তাঁকে সুজলা সুফলা দিয়ে ছন্দে বেঁধে ফেলতে পারবে না ।
দেহলিজ, সেই বাধ্যবাধকতা মানে না । শহরে নতুন ভাইরাস মন্ডরাচ্ছে । বাংলা নিয়ে আপনার যে আদিখ্যেতা, আর অবাংলার যে আগ্রাসন সবই এক পথের যাত্রী । যে যাত্রা, এই নগর সভ্যতার ভিতরদিককার, তাদের রক্ত পুঁজ ঘাম এখানেই দফন হোক । এই মৃত মুনিয়ার সেই লাশ যেন কেউ জল ঘোলা গঙ্গা বক্ষে না বিসর্জন দেন । দেহলিজের যে সাহিত্য প্রচেষ্টায় আমরা কজন তরুণ একজোট, আমাদের এইটুকুন অভিপ্রায় যে আমাদের মৃত্যু যেন স্বাভাবিক ভাবে হয় ।
প্রশ্ন হচ্ছে ; এই বিপর্যয়ের সময়, কবিতা লেখা কি ঠিক ? কারা পড়বেন এই কবিতা ? দিল্লিতো নিজেই নিজের অহমিকায় রাজধানী । রাজার কাছে কবিতার জন্য সময় নাই । যদি, প্রজার কাছে যাই, তার ঘরে খাবার নাই । রাজা তাঁকে খাবার দেবেন, তবে প্রজা খাবেন । বড় কঠিন হেঁয়ালি ভাই । রাজা গদি বাঁচাবেন নাকি ক্ষেতখামার করবেন সেতো ইতিহাস বলবেন, এই মুহূর্তে সঠিক মার্গ আমাদের কারো জানা নেই । স্বয়ং ঈশ্বরের ঘরে তালা মারা । এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে খুঁজতে আলফা সেঞ্চুরির কোন এক সাম্রাজ্য কোন এক আলোকবর্ষ দূরে আমাদের ঈশারা করে । আমরা তার গোপন গতি দেখি । ঐ দ্যাখো চাঁদ পূবের আকাশে আবার উঠেছে ।
অল দ্য বেস্ট। আপনারা জুড়ে থাকুন। স্টে টিউনড ।
-----------------
Courtesy: All images are taken from Delhi & ouskirts. The NCR locality has very less to offer in terms of wild spots and habitable jungles, humans have colonized their part of pie. But NCR still covers more ridge and beautiful creatures and remains approachable despite aggression from multi stories and corporate houses. One of my friend Abhishek Gautam has helped me to take the mobile snaps from Dumdama Lake and Sultanpur Bird Sanctuary.